তাওহীদ আর-রহমান পিডিএফ বই। শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুনীর
আল-ইতকান ফী তাওহীদ আর-রাহমান
আসসালামু আলাইকুম, তাওহীদ আর রহমান, তাওহীদের উপরে লিখিত যুগ শ্রেষ্ঠ একটি গ্রন্থ। আমি যদি অন্যান্য তাওহীদ বইয়ের সাথে এই বইটির তুলনা করি তাহলে বলবো তাওহীদের উপরে লিখিত বর্তমান যুগে যে সমস্ত বই আছে সব বই একই ধারায় লিখিত। কিন্তু তাওহীদ আর-রহমান বইটি সব বই থেকে আলাদা।
তাওহীদ আর-রহমান |
এই বই থেকে আপনি যা যা শিখতে পারবেন তার একটি সংখিপ্ত ধারনা দিচ্ছি।
১। একজন ব্যক্তি কীভাবে মুসলিম হিসেবে গণ্য হয়?
২। কীভাবে একজন ব্যক্তি কাফিরে পরিণত হয় তথা ঈমান ভঙ্গের কারণসমূহ।
৩। উসুলে তাকফীর তথা তাকফীরের মূলনীতিসমূহ।
লেখকের কথা
তাওহীদ দ্বীনের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ একটি স্তম্ভ। তাওহীদ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন ছাড়া নিজের ঈমান-আক্বীদার হেফাজত করা এবং আখিরাতে মুক্তি অর্জন করা সম্ভব নয়। দুঃখের বিষয় হলেও সত্য যে, বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষ বিষয়টির গুরুত্ব সম্পর্কে গাফেল রয়েছে। সাধারন মানুষ সলাত--সপ্তম, হজ্জ-যাকাত ইত্যাদি ইবাদত সম্পর্কে যতটা গুরুত্বসহকারে জানার চেষ্টা করে তাওহীদ-শিরক ও ঈমান-কুফর সম্পর্কে ততটা গুরুত্ব প্রদান করে না। একইভাবে মাঠে ময়দানে ও মসজিদের মিম্বারে যারা ইসলাম সম্পর্কে আলোচনা করেন তারাও শিরক কুফর সম্পর্কে সুবিস্তারে আলোচনা করেন না। কেউ কেউ অবশ্য তাওহীদ ও শিরক সম্পর্কে লেখা-লেখি করেছেন, তবে তাদের বেশিরভাগই পূর্ববর্তী ওলামায়ে কেরামের মতামত ও সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে তাওহীদ সম্পর্কে মনগড়া ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেছেন। অথচ দ্বীনী মাসয়ালা-মাসায়েলসমূহের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত বর্ণনা করার সঠিক পন্থা হলো- সাহাবায়ে কিরাম ও তাদের
নিকটবর্তী যুগের আইম্মায়ে মুজতাহিদীনদের মতামতকে আঁকড়ে ধরা।
রসুলুল্লাহ (সা:) তার উম্মতকে সাহাবায়ে কিরাম ও তাদের নিকটবর্তী যুগের সত্যপন্থী ওলামায়ে কিরামের মতামত ও চিন্তাধারার অনুসরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আমার উম্মতের মধ্যে সর্বত্তম হলো আমার সাহাবারা, তারপর তাদের পরের যুগের লোকেরা, তারপর তাদের পরের যুগের লোকেরা। অন্য স্থানে তিনি বলেন, তোমরা আমার সুন্নাত অনুসরণ করো আর সত্যপন্থী খোলাফায়ে রাশেদার সুন্নাত অনুসরণ করো। অন্য একটি হাদীসে এসেছে, রসুলুল্লাহ বলেন, এই উম্মত তিয়াত্তর দলে বিভক্ত হবে। তাদের মধ্যে কেবল একটি দল জান্নাতী হবে, বাকীরা জাহান্নামে যাবে। বলা হলো- তারা কারা? তিনি বললেন, যারা আমি এবং আমার সাহাবারা যে পথে আছে সেই পথে থাকবে। একারণে মুসলিম উম্মার আলেমরা আল্লাহর দ্বীনের ব্যাপারে সাহাবায়ে কিরাম ও তাদের নিকটবর্তী যুগের ওলামায়ে কিরামের মতামতকে চূড়ান্ত জ্ঞান করতেন। তারা কোনো ব্যাপারে ইজমা করে থাকলে তার বিরোধিতা করা নিষিদ্ধ মনে করতেন এবং তারা কোনো ব্যাপরে দ্বিমত করে থাকলে প্রতিটি মতকে শ্রদ্ধা করতেন। আমাদের নিকট ইসলামের যে কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সঠিক পন্থা এটাই। ভিন্ন একটি গ্রন্থে আমরা জ্ঞান অর্জনের সঠিক পথ সম্পর্কিত আলোচনাতে এ বিষয়ে বিস্তারিত দলিল প্রমাণ পেশ করেছি।
বর্তমান যুগ বাক স্বাধীনতা ও মুক্তচিন্তার যুগ। অন্যান্য মানুষের সাথে ইসলামপন্থী চিন্তাবিদ ও গবেষকরাও মুক্তবুদ্ধির চর্চা করতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন। ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে সমসাময়িক লেখকরা স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে শুরু করেছেন। বর্তমানে ইলম চর্চা বলতে বোঝায় একটি আয়াত বা কয়েকটি হাদীস উপস্থাপণ করে ইচ্ছামত ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের মাধ্যেম নিজের মত প্রমাণ করা। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সাহাবায়ে কিরাম ও তাদের নিকটবর্তী যুগের ওলামায়ে দ্বীনের মতামত কি তা বিবেচনা করা হয় না। তাওহীদ ও শিরকের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েও তারা একই পন্থা অবলম্বন করেন। পূর্ববর্তী ওলামায়ে কিরামের মতামত পরিত্যাগ করে তারা স্ব-রচিত নিয়মনীতি অনুসারে সিদ্ধান্ত বর্ণনা করেন। এধরনের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে মুসলিম উম্মার একটি বিরাট অংশ এখন জেনে বা না জেনে খারেজী, মুতাজিলা, মুরজিয়া, মুজাসসিমা ইত্যাদি বিদয়াতী ফিরকার আক্বীদা-বিশ্বাস অনুসরণ করতে শুরু করেছে। বর্তমান গ্রন্থে আমরা এই প্রচলিত ধারার বিপরীতে সঠিক পদ্ধতিতে তাওহীদের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ উপস্থাপণ করতে চাই। তাওহীদের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে পূর্ববর্তী ওলামায়ে কিরামের মতামত বর্ণনাপূর্বক কোন বিষয়ে তারা ইজমা করেছেন আর কোন বিষয়ে দ্বিমত করেছেন তা পৃথকভাবে চিহ্নিত করা এবং মুহাক্কিক ওলামায়ে দ্বীনের বিশ্লেষণ ও উসুলে ফিকাহর মূলনীতি অনুযায়ী মতপার্থক্যপূর্ণ বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত বর্ণনা করাই আমাদের উদ্দেশ্য। সন্দেহ নেই যে, এ কাজ ভীষণ কষ্টসাধ্য। মহান রব্বুল আলামীনের নিকট আমাদের প্রার্থনা যেনো তিনি আমাদের এই কাজকে সফল করেন।
পাঠকের স্মরনার্থে বলবো, বর্তমানে তাওহীদ ও শিরক সম্পর্কে যে বিভ্রান্তি ও বিভ্রাট সৃষ্টি হয়েছে তা নিরসনে বিস্তারিত ও দীর্ঘ আলোচনার কোনো গত্যন্তর ছিল না। সত্যান্বেষী পাঠক এই প্রয়োজনকে অনুধাবন করে আলোচনার বিস্তারনকে অকারণ মনে না করলেই আমি নিজেকে ধন্য মনে করবো।
পরিশেষে, এই গ্রন্থ রচনায় যারা উৎসাহ যুগিয়েছেন এবং সহযোগিতা করেছেন সবার জন্য প্রার্থনা করি যেনো মহান রব্বুল আলামীনের দরবারে এই গ্রন্থটি আমাদের পরকালের পাথেয় হিসেবে গৃহীত হয়।
আমীন।
লেখকঃ এই গবেষণা গ্রন্থটি লিপিবদ্ধ করেছেন শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মুনির। শায়েখ একজন ইসলামীক গবেষক। বাংলার বুকে শায়খ আরবি ভাষার শ্রেষ্ট গবেষক এবং শিক্ষক। শায়েখের অনেক ছাত্র আছে, যাদের শায়েখ নিয়মিত দ্বীন শিক্ষা দিয়ে থাকেন। এছাড়া শায়েখ দারসি নিজাম শিক্ষা ব্যাবস্তার উদ্ভাবক।
বই প্রাপ্তির স্থানঃ
(মোঃ মারুফ হোসেন, মুসলিম ফটোস্ট্যাট, পুরাতন রেলবাজার, দর্শনা, চুয়াডাঙ্গা, মোবাইলঃ 0 1931-441214) (মোঃ ইমরান হোসেন, ইমরান বই ঘর, ঝিনাইদহ বাস টার্মিনাল, ঝিনাইদহ, মোবাইলঃ 01841-612728) এবং এই যুগশ্রেষ্ট বইটির পিফিএফ ডাউনলোড করতে ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করুন অথবা এখানে ক্লিক করুন....
তাওহীদ আর-রহমান পিডিএফ |
0 Comments